বিশেষ প্রতিনিধি ॥ কোনো ধরনের উস্কানিতে পা না দিয়ে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চালিয়ে যেতে দলীয় নেতাদের নির্দেশ দিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন কারারুদ্ধ খালেদা জিয়া। গতকাল বুধবার বিকেলে নাজিমউদ্দিন রোডের পুরান কারাগারে বিএনপি মহাসচিবসহ দলটির নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির নেতারা খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাত শেষে কারাগারের বাইরে পুলিশি ব্যারিকেডের সামনে উপস্থিত সাংবাদিকদের কাছে একথা জানান বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এ সময় খালেদা জিয়া সঙ্গে সাক্ষাত করতে যাওয়া দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, ড. আবদুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও খালেদা জিয়ার একান্ত সচিব এ বি এম আবদুস সাত্তার মির্জা ফখরুলের সঙ্গে ছিলেন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিবের কাছে দলীয় প্রধানের কাছে সাক্ষাতের জন্য আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এই সাক্ষাতের অনুমতি পেয়েছেন বলে জানান মির্জা ফখরুল। বেলা সোয়া তিনটার সময়ে আমরা তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করার সুযোগ পেয়েছি। সাড়ে ৪টায় এই সাক্ষাৎ শেষ হয় বলে জানা যায়। বিকাল ২টা ৫০ মিনিটে মির্জা ফখরুলের নেতৃত্বে স্থায়ী কমিটির ৭ সদস্য পুরানো ঢাকার নাজিমউদ্দিন সড়কে কেন্দ্রীয় কারাগারে প্রবেশ করেন। এ রোডের পুলিশি ব্যারিকেড থেকে পায়ে হেটে ফখরুল সহ নেতৃবৃন্দরা কারাগারে প্রবেশ করেন। আবার কারাগার থেকে সাক্ষাতের পর বেরিয়ে পায়ে হেটে এসে পুলিশি ব্যারিকেডের কাছে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলে গাড়িতে উঠেন তারা। গত ৮ মার্চ জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার ৫ বছরের সাজা হলে তাকে পুরনো ঢাকার এ পরিত্যাক্ত কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়। কারাবাসের একমাসের মাথায় সিনিয়র নেতারা দলীয় প্রধানের সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ পেলেন। মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের নেত্রী সুনির্দিষ্টভাবে বলে দিয়েছেন, কারো উস্কানিতে পা না দিয়ে সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন চালিয়ে যাবার জন্য আমাদের বলে দিয়েছেন। কারাগারে খালেদা জিয়া সুস্থ আছেন। তিনি (খালেদা জিয়া) দেশবাসীকে জানাতে বলেছেন, তিনি অটুট আছেন, তার শরীর ভালো আছে। দেশের জন্য, গণতন্ত্রের জন্য তিনি যেকোনো ত্যাগ স্বীকার করতে প্রস্তুত রয়েছেন। তার সঙ্গে আলাপ করে আমরা এতোটুকু বুঝতে পেরেছি, তার মনোবল অত্যন্ত উঁচু আছে। তিনি সাহসিকতার সঙ্গে প্রতিকুল পরিবেশকে মোকাবিলা করছেন। এই কারারুদ্ধ অবস্থায় তিনি দেশের জন্যই চিন্তা করছেন। সত্য প্রতিষ্ঠিত হবে বলে তিনি মনে করেন। বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা মনে করি সত্য একদিন প্রতিষ্ঠিত হবে। বেআইনিভাবে সম্পূর্ণ মিথ্যা একটি মামলা দিয়ে তাকে কারা অন্তরীন করে রাখা হয়েছে এবং এখন বিভিন্ন কারসাঁজির মধ্য দিয়ে, ছলচাতুরির মধ্য দিয়ে তার কারাবাসকে দীর্ঘ করবার চেষ্টা করছে। এর সব কিছুই দূরীভুত হবে বলে আমরা বিশ্বাস করি। আইনি লড়াইয়ের সঙ্গে সঙ্গে আমাদের রাজনৈতিক যে সংগ্রাম, সেই সংগ্রামও চলছে তাকে মুক্ত করা ও গণতন্ত্রকে পূণঃপ্রতিষ্ঠা করবার জন্যে। এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, দল এখন যৌথ নেতৃত্বে চলছে। চেয়ারপারসন কারা অন্তরীনের পর থেকে আমরা যৌথ নেতৃত্বে দল পরিচালনা করছি, আন্দোলন পরিচালনা করছি। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সঙ্গে পরামর্শ করেই আমরা সকল সিদ্ধান্ত গ্রহন করছি ।
Leave a Reply